Pages

Wednesday, March 26, 2014

জান্নাতে আল্লাহর দিদার লাভ

জান্নাতে আল্লাহর দিদার লাভঃ

জান্নাতের সর্বোৎকৃষ্ট, সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বোত্তম নেয়ামত হবে দিদারে ইলাহী বা সরাসরি আল্লাহর দিদার লাভ। ( মুসলিম শরীফ )।

আল্লাহর দিদার বা দর্শন লাভকারীদের অবস্থান হবে চার ধরণের। এক প্রকার লোক যারা সারা বছরে একবার আল্লাহর দিদার লাভের সৌভাগ্য অর্জন করবে। দ্বিতীয় প্রকার সপ্তাহে প্রতি শুক্রবার। তৃতীয় প্রকার দৈনন্দিন দুইবার আল্লাহর দিদার লাভের সৌভাগ্য অর্জন করবে। ( মুসলিম শরীফ )।
হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে, যারা ফজর এবং আসরের নামায খুশু-খুজু বা অত্যন্ত মনযোগ সহকারে একনিষ্ঠভাবে আদায় করবে, তাদের জন্য দৈনন্দিন দুইবার আল্লাহর দিদার লাভ খুবই সহজতর হবে। আর চতুর্থ প্রকার হবে চূড়ান্ত বিশ্বস্ত, আস্থাভাজন, বিশেষ বিশেষ লোক, যারা চাকর-বাকরের ন্যায় সদা-সর্বদা, সর্বক্ষণ দিদারে ইলাহীর চরম সৌভাগ্য অর্জন করতে থাকবে। ( মুসলিম, তিরমিজী, ইবনে মাজাহ )।

আল্লাহ্‌ তা'আলা আমাদের সকলকে জান্নাতে প্রতিমুহূর্তে দিদারে ইলাহীর সৌভাগ্য অর্জনের তৌফিক দান করুন। আ-মী-ন।

জান্নাতে মুমিনদের আল্লাহর
দিদার লাভঃ
যদি আপনি মহা পরাক্রমশালী প্রশংসিত
প্রভুর সাক্ষাৎ এবং কোন প্রকার
উপমা ও সাদৃশ্য হতে পবিত্র তাঁর
চেহারা দর্শন সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেন তবে জেনে নিন
যে আপনি কিয়ামতের দিন
আল্লাহকে সেরকমই দেখতে পাবেন,
যেমন পরিস্কার আকাশে দিনের
বেলায় সূর্য এবং রাতের বেলায়
পূর্ণিমার চন্দ্রকে দেখতে পান। এ সম্পর্কে রাসূল (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
হতে মুতাওয়াতির (ধারাবাহিক)
সূত্রে হাদীছ বর্ণিত হয়েছে।
যারীর, সুহাইব, আনাস, আবু হুরায়রা,
আবু মুসা, আবু সাঈদ ও অন্যান্য সাহাবী (রাঃ) হতে সহীহ
এবং সুনানের কিতাবগুলোতে এসমস্ত
হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। অতএব
আপনি শ্রবণ করুন, যে দিন
ঘোষণাকারী এই
বলে ঘোষণা করবে যে, হে জান্নাতবাসীগণ! আপনাদের প্রভু
আপনাদের সাথে সাক্ষাৎ করবেন।
আপনারা তাড়াতাড়ি বের হয়ে আসুন!
জান্নাতবাসীগণ দ্রুত বের
হয়ে এসে দ্রুতগামী বাহনগুলো প্রস্তুত
অবস্থায় দেখতে পাবেন। বাহনের উপর তারা উঠে বসবেন। যখন
তারা প্রশস্ত উপত্যকায় সমবেত
হবেন তখন আল্লাহ
তাআলা সেখানে কুরসী স্থাপন
করতে বলবেন। তারপর
জান্নাতবাসীদের জন্যে মণি-মুক্তা, নূর, যাবারযাদ, এবং স্থাপন করা হবে।
তারা যখন স্থির হয়ে বসবেন তখন
ঘোষণা দেয়া হবেঃ হে জান্নাতীগণ!
সালামুন আলাইকুম (আপনাদের উপর
শান্তি বর্ষিত হোক)। অতি সুন্দর ভাষায় তারা সালামের উত্তর
দিবেনঃ
َﺖْﻛَﺭﺎَﺒَﺗ ُﻡﺎَﻠَّﺴﻟﺍ َﻚْﻨِﻣَﻭ ُﻡﺎَﻠَّﺴﻟﺍ َﺖْﻧَﺃ َّﻢُﻬَّﻠﻟﺍ
ٍﺮْﻴَﻤُﻧ ِﻦْﺑﺍ ِﺔَﻳﺍَﻭِﺭ ﻲِﻓَﻭ ِﻡﺍَﺮْﻛِﺈْﻟﺍَﻭ ِﻝﺎَﻠَﺠْﻟﺍ ﺍَﺫ
ِﻡﺍَﺮْﻛِﺈْﻟﺍَﻭ ِﻝﺎَﻠَﺠْﻟﺍ ﺍَﺫ ﺎَﻳ
অর্থঃ হে আল্লাহ! আপনি শান্তিময়। আপনার পক্ষ হতেই শান্তির
ধারা বর্ষিত হয়ে থাকে।
হে মহা সম্মানের অধিকারী!
আপনি অতি বরকতময়। তাদের উত্তর
শুনে আল্লাহ তাআলা সর্বপ্রথম
বলবেনঃ আমার সেই বান্দাগণ কোথায়? যারা আমাকে না দেখেই
আমার আনুগত্য করেছিল। আজ তাদের
অতিরিক্ত পুরস্কারের দিন। তখন
সকল জান্নাতবাসী এক
বাক্যে বলবেনঃ হে আল্লাহ
আমরা আপনার উপর সন্তুষ্ট। সুতরাং আপনিও আমাদের উপর সন্তুষ্ট
হয়ে যান। তখন আল্লাহ
বলবেনঃ হে জান্নাতীগণ!
আমি যদি তোমাদের উপর সন্তুষ্ট
না থাকতাম
তাহলে তোমাদেরকে আমার এই জান্নাতে প্রবেশ করাতামনা। আজ
তোমাদের জন্যে অতিরিক্ত
পুরস্কারের দিন। তোমাদের মন
যা চায়, তাই চাইতে পার। তখন
সকলেই এক বাক্যে বলবেনঃ আমাদের
জন্যে আপনার চেহারা মুবারাক উম্মুক্ত করুন। আমরা আপনার
দিকে তাকিয়ে আপনার দর্শন লাভের
নেয়া’মত ভোগ করব। তারপর আল্লাহ
তাআলা চেহারার পর্দা উম্মুক্ত
করে তাদের সামনে বের হবেন।
আল্লাহর নূর তাদেরকে আচ্ছাদিত করে ফেলবে। আল্লাহ যদি এ
ফয়সালা না করতেন
যে তারা আল্লাহর নূরে প্রজ্বলিত
হবেনা তাহলে তাঁরা অবশ্যই
জ্বলে যেতেন। ঐ
মজলিসে যারা উপস্থিত হবেন তাদের সবার সাথেই আল্লাহ রাব্বুল
আলামীন কথা বলবেন।
এমনকি আল্লাহ বলবেনঃ হে আমার
বান্দা! তোমার কি মনে আছে?
তুমি অমুক দিন এই কাজ করেছিলে।
সে বলবে, হে দয়াময় আল্লাহ! আপনি কি আমাকে ক্ষমা করে দেননি?
আল্লাহ বলবেনঃ আমার ক্ষমার
বিনিময়েই তুমি এই মর্যাদায়
পৌঁছতে সক্ষম হয়েছো। কতইনা সুন্দর
হবে আল্লাহর এসমস্ত কথা শ্রবণ!!
সম্মানিত প্রভুর চেহারার দিকে তাকিয়ে চক্ষু
শীতলকারী সৎকর্মশীলদের
কতইনা সৌভাগ্য!! ক্ষতিগ্রস্ত
ব্যবসা নিয়ে প্রত্যাবর্তনকারীদের
কতইনা দুর্ভাগ্য!! আল্লাহ বলেনঃ
ٌﺓَﺮِﻇﺎَﻧ ﺎَﻬِّﺑَﺭ ﻰَﻟِﺇ ٌﺓَﺮِﺿﺎَﻧ ٍﺬِﺌَﻣْﻮَﻳ ٌﻩﻮُﺟُﻭ َﻞَﻌْﻔُﻳ ْﻥَﺃ ُّﻦُﻈَﺗ ٌﺓَﺮِﺳﺎَﺑ ٍﺬِﺌَﻣْﻮَﻳ ٌﻩﻮُﺟُﻭَﻭ
ٌﺓَﺮِﻗﺎَﻓ ﺎَﻬِﺑ
অর্থঃ “সেদিন অনেক মুখমন্ডল
উজ্জ্বল হবে। তারা তাদের
প্রতিপালকের
দিকে তাকিয়ে থাকবে। আর অনেক মুখমন্ডল সেদিন উদাস হয়ে পড়বে।
তারা ধারণা করবে যে, তাদের
সাথে কোমর ভাঙ্গা আচরণ করা হবে।
(সূরা আল-কিয়ামাহঃ ২২-২৫)

2 comments: