Pages

Friday, May 23, 2014

আল্লাহ পাকের দিদার, আল্লাহর ইবাদতের অর্থ, আল্লাহর নৈকট্য লাভের উপায় - আল্লামা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী

আল্লাহ পাকের দিদার, আল্লাহর ইবাদতের অর্থ, আল্লাহর নৈকট্য লাভের উপায় - আল্লামা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী 

আল্লাহ পাকের দিদার:


আল্লাহর ইবাদতের অর্থ:


আল্লাহর নৈকট্য লাভের উপায়:

Thursday, May 22, 2014

আল্লাহ তা’য়ালা সম্পর্কে তিনটি প্রশ্ন এবং একটি বালকের জবাব

আল্লাহ তা’য়ালা সম্পর্কে তিনটি প্রশ্ন এবং একটি বালকের জবাব

অনেক বছর আগে, তাবেয়ীনদের সময়ে (সাহাবীদের পরের সময়ে)। বাগদাদ ছিল ইসলামী সাম্রাজ্যের রাজধানী। তৎকালীন প্রখ্যাত বহু আলিম এখানে বসবাস করতেন। তাই এটি হয়ে উঠেছিল ইসলামী জ্ঞানের কেন্দ্রভূমি।


Saturday, May 10, 2014

কোরআনে কি এমন কথা আছে যে, " আল্লাহর ইশারা বা হুকুম ছাড়া গাছের একটি পাতাও নড়ে না অথবা পড়ে না।" ?

কোরআনে কি এমন কথা আছে যে, " আল্লাহর ইশারা বা হুকুম ছাড়া গাছের একটি পাতাও নড়ে না অথবা পড়ে না।" ?

উত্তর:

না, কোরআনে এমন কথা বলা নেই যে "আল্লাহর ইশারা বা হুকুম ছাড়া গাছের একটি পাতাও নড়ে না অথবা পড়ে না"।
বরং নিচের আয়াতগুলো দেখলে দেখা যাবে, আল্লাহর অজ্ঞাতসারে কোন কিছুই হয় না, এমন কি গাছের একটি পাতাও পড়ে না এবং কোন ফল আবরণ মুক্ত হয়না।
অর্থাৎ আল্লাহ্‌ সব কিছুই জানেন এবং তার অজ্ঞাতসারে কোন কিছুই হয় না।
এই কথাটাই কোনো ভাবে বিকৃত হয়ে সাধারণ সল্প জ্ঞানী মানুষের কাছে অন্যরুপ ধারণ করেছিলো।
" তাঁরই নিকট অদৃশ্যের চাবি রয়েছে, তিনি ব্যতীত অন্য কেউ তা জানে না। স্থলে ও জলে যা কিছু আছে তা তিনিই অবগত, তার অজ্ঞাতসারে একটি পাতাও পড়ে না, মৃত্তিকার অন্ধকারে এমন কোন শস্যকণাও অন্কুরিত হয় না অথবা রসযুক্ত কিম্বা শুষ্ক এমন কোন বস্তু নেই যা সুস্পষ্ট কিতাবে (কোরআনে) নেই। (Al-An'aam 6: 59)"
"কিয়ামতের জ্ঞান কেবল আল্লাহ্‌র নিকট আছে, তাঁর অজ্ঞাতসারে কোন ফল আবরণ মুক্ত হয়না, কোন নারী গর্ভধারণ ও সন্তান প্রসব করে না। যেদিন আল্লাহ্‌ ওদের ডেকে বলবেন, আমার অংশীদাররা কোথায় ? তখন ওরা বলবে, 'আমরা আপনার নিকট নিবেদন করছি যে, এ ব্যাপারে আমরা কিছুই জানি না' । (Fussilat ( Haa Mim sijadaha) 41: 47) "

অনুবাদের সূত্র : (Al-An'aam 6: 59) এবং (Fussilat ( Haa Mim sijadaha) 41: 47)

কোরআনের বাংলা অনুবাদক : মাওলানা মোবারক করীম জওহর
প্রকাশক : হরফ প্রকাশনী (কলকাতা)
প্রকাশের সময় : ৩ সেপ্টেম্বর ১৯৭৪

তাহলে এতদিন যারা বা যেই সব মুসলিম বিরোধী লোকেরা কোরআন সম্পর্কে মিথ্যা ধারণা দিয়ে অর্থাৎ, " আল্লাহর ইশারা বা হুকুম ছাড়া গাছের একটি পাতাও নড়ে না অথবা পড়ে না।" এই সব কথা বলে নিজেদের দোষ ঢাকতে চেয়েছিলো বা তাদের দোষ আল্লাহর উপর চাপাতে চাচ্ছিলো, তাদের নির্দোষ হওয়ার সমস্ত রাস্থাই বন্ধ হয়ে গেছে।
আল্লাহ সব শুনেন, সব দেখেন, তিনি সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান এবং শক্তিমান আর অদৃশ্য বিষয়ের জ্ঞান তাঁরই কাছে রয়েছে, আল্লাহ সবকিছুর তত্ত্বাবধায়ক এবং তিনি যা ইচ্ছা তাই করেন।


Monday, May 5, 2014

আল্লাহ মানুষের সাথে সরাসরি কথা বলেন না কেন ?

আল্লাহ মানুষের সাথে সরাসরি কথা বলেন না কেন ?



১ নং উত্তর: 

মানুষ এমন কোন মর্যাদার প্রাণি নয় যে আল্লাহ তাদের সাথে সরাসরি কথা বলবেন। আল্লাহ মানুষের সাথে কথা বলার সময়ে হয় ওহীর (প্রত্যাদেশ) মাধ্যম বা অন্তরাল থেকে অথবা কোন দূত (জিব্রাঈল) প্রেরণ করে কথা বলেন। নিচের আয়াতগুলো দেখুন।
 
"মানুষের এমন মর্যাদা নেই যে, আল্লাহ্‌ তার সাথে সরাসরি কথা বলবেন ওহীর (প্রত্যাদেশ) মাধ্যম ব্যতিরেকে, অন্তরাল ব্যতিরেকে অথবা জিব্রাঈল প্রেরণ ব্যতিরেকে যে (জিব্রাঈল) আল্লাহ্‌ যা চান তা ব্যক্ত করে তাঁর অনুমতিক্রমে; নিঃসন্দেহে তিনি সমুন্নত, প্রজ্ঞাময় । (Ash-Shura:51)"

"এভাবে আমি তোমার প্রতি প্রত্যাদেশ করেছি গ্রন্থ তথা আমার নির্দেশ, তুমি তো জানতে না গ্রন্থ কি, বিশ্বাস কি। পক্ষান্তরে আমি একে করেছি আলো যা দ্বারা আমি আমার দাসদের যাকে ইচ্ছা পথ-নির্দেশ করি; তুমি তো কেবল সরল পথই প্রদর্শন কর। (Ash-Shura:52)"

"আল্লাহ্‌র পথ। আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে তা তাঁরই। সকল পরিণাম আল্লাহর নিকট । (Ash-Shura:53)"



সূত্র :

কোরআনের বাংলা অনুবাদক : মাওলানা মোবারক করীম জওহর

প্রকাশক : হরফ প্রকাশনী (কলকাতা)

প্রকাশের সময় : ৩ সেপ্টেম্বর ১৯৭৪
 
সূরা শূরার আয়াত নং ৪২:৫১ (Ash-Shura:51) এর অনুবাদ কোথাও কোথাও অন্যরকমও দেখা যায়।
তবে মোট কথা প্রায় একই রকমের।
"কোন মানুষের জন্য এমন হওয়ার নয় যে, আল্লাহ তার সাথে কথা বলবেন। কিন্তু ওহীর মাধ্যমে অথবা পর্দার অন্তরাল থেকে অথবা তিনি কোন দূত প্রেরণ করবেন, অতঃপর আল্লাহ যা চান, সে তা তাঁর অনুমতিক্রমে পৌঁছে দেবে। নিশ্চয় তিনি সর্বোচ্চ প্রজ্ঞাময়। (Ash-Shura:51)"

২ নং উত্তর:
মানুষ কি বিশ্বাস করবে যে, আল্লাহ তার সাথে কথা বলছেন? আল্লাহ সকল রূহের সাথে (মানুষের সহ) রূহের জগতে একবার কথা বলেছিলেন। তিন জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে, তিনি রুহদিগের প্রভু কিনা এবং সব রুহ তার উত্তরে বলেছিল যে, আল্লাহই তাদের প্রভু। তখন রুহগুলোর একরকম উপলব্ধি ছিল যার জন্য তারা আল্লাহর অস্তিত্ব বুঝতে পেরেছিল। পরবর্তীতে এই জড়জগতে আসার পরে সেই উপলব্ধি আর থাকে না। এটা সাধনার দ্বারা অর্জন করতে হয়। মূসা (আঃ) সহ আরো নবী-রসূলগণের সাথে আল্লাহ কথা বলেছেন। নবী-রসূলগণের উপলব্ধি সেইরকম হওয়ার কারণে আল্লাহ তাদের সাথে কথা বলেছেন আর সাধারণ মানুষের জন্য তাদের মাধ্যমে দিকনির্দেশনা জানিয়ে দিয়েছেন। ফলে কথা বলার দরকার নেই। কেউ যদি আরো বিস্তারিত জানতে চায়, তবে তাকে সাধনা করতে হবে মনের উপলব্ধি ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য। এভাবে সে বিভিন্ন বিষয়ের মূলকথা জানতে পারে যা সাধারণভাবে বোধগম্য হয় না।


Sunday, May 4, 2014

হযরত মুসা (আঃ)-এর সাথে আল্লাহর সাক্ষাৎ, আল্লাহর নিদর্শন এবং তা অমান্যের পরিণতি

হযরত মুসা (আঃ)-এর সাথে আল্লাহর সাক্ষাৎ, আল্লাহর নিদর্শন এবং তা অমান্যের পরিণতি


সূরা আরাফের ১৪৩ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ বলেছেন-
  وَلَمَّا جَاءَ مُوسَى لِمِيقَاتِنَا وَكَلَّمَهُ رَبُّهُ قَالَ رَبِّ أَرِنِي أَنْظُرْ إِلَيْكَ قَالَ لَنْ تَرَانِي وَلَكِنِ انْظُرْ إِلَى الْجَبَلِ فَإِنِ اسْتَقَرَّ مَكَانَهُ فَسَوْفَ تَرَانِي فَلَمَّا تَجَلَّى رَبُّهُ لِلْجَبَلِ جَعَلَهُ دَكًّا وَخَرَّ مُوسَى صَعِقًا فَلَمَّا أَفَاقَ قَالَ سُبْحَانَكَ تُبْتُ إِلَيْكَ وَأَنَا أَوَّلُ الْمُؤْمِنِينَ (143)

"মূসা যখন আমার নির্ধারিত স্থানে উপস্থিত হলো এবং তাঁর প্রতিপালক তাঁর সাথে কথা বললেন, তখন মূসা বললো, হে আমার প্রতিপালক! আমার কাছে দেখা দিন যাতে আমি আপনাকে দেখতে পারি । আল্লাহ বললেন, আমাকে কখনও দেখতে পারবে না । বরং পাহাড়ের দিকে তাকাও, যদি তা নিজ স্থানে স্থির থাকে, তবে তুমি আমাকে দেখবে । যখন তাঁর প্রতিপালক পাহাড়ে তাঁর জ্যোতি প্রকাশ করলেন, তখন তা পাহাড়কে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে ফেললো, আর মূসা জ্ঞানহীন হয়ে পড়লো । যখন জ্ঞান ফিরে পেলো, তখন মূসা বলল, মহা পবিত্র আপনি, বা আপনি দর্শন থেকে পবিত্র, আমি আপনার কাছে ক্ষমা চাইছি এবং আমিই সর্বপ্রথম আপনার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করছি।" (৭:১৪৩)

আগের আয়াতের আলোচনায় আমরা জেনেছি, মহান আল্লাহ তাওরাত গ্রন্থ গ্রহণ করতে হযরত মূসা (আ.)কে তুর পাহাড়ে চল্লিশ দিন ধরে অবস্থানের আহবান জানান। এ আয়াতে বলা হচ্ছে, হযরত মূসা (আ.) তুর পাহাড়ে আসেন এবং মহান আল্লাহর সাথে কথা বলেন। হযরত মূসা (আ.)’র কাছে উত্থাপিত বনী ইসরাইলের বিভিন্ন দাবির মধ্যে একটি দাবি ছিল, মহান আল্লাহকে চোখ দিয়ে দেখা । তাই, মূসা (আ.) মহান আল্লাহর কাছে এ দাবি পেশ করে বলেনঃ হে আল্লাহ যদি সম্ভব হয়, তাহলে আমার সামনে এমনভাবে দেখা দিন, যাতে আমি আপনাকে আমার চোখ দিয়ে দেখতে পারি এবং যাতে আমার জাতির কাছে এটা বলতে পারি যে, আমি আল্লাহকে দেখেছি। কিন্তু মহান আল্লাহ এর উত্তরে বলেনঃ না, তুমিও আমাকে কখনও দেখতে পারবে না, কারণ, আমি দর্শনাতীত, অবশ্য আমার ক্ষমতা ও শক্তির নিদর্শন দেখতে পাবে। আর এ জন্যে এ পাহাড়ের দিকে তাকিয়ে দেখ, তা আমার ইচ্ছায় কিভাবে ধ্বংস হয়ে  গেছে। এ অবিশ্বাস্য ঘটনা দেখে হযরত মূসা (আ.) জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন এবং মাটিতে পড়ে যান। পরে হুঁশ ফিরে এলে তিনি বলেন, আমি সবার আগে আপনার প্রতি ঈমান আনলাম এবং আপনার শক্তি ও মহামহিমা বা মহা প্রতাপের সাক্ষ্য দিচ্ছি। আর এ ধরনের অযৌক্তিক দাবি উত্থাপনের জন্যে আাপনার কাছে ক্ষমা চাইছি। নিশ্চয়ই আপনি চোখে দেখার অনেক উর্ধ্বে ও এ ধরনের সীমাবদ্ধতা থেকে পবিত্র ।
আমীরুল মুমিনিন হযরত আলী (আ.)’র কাছে এক ব্যক্তি প্রশ্ন করেন, আপনি কি আল্লাহকে দেখেছেন যে এভাবে তাঁর ইবাদত করছেন? উত্তরে তিনি বললেন, যে আল্লাহকে আমি দেখি না বা জানি না আমি তাঁর ইবাদতও করি না, অবশ্য দেখা বলতে আমি চোখ দিয়ে দেখা নয়, বরং অন্তর দিয়ে দেখাকে বোঝাচ্ছি । অন্য এক সময় তিনি বলেছেন, আমি এমন কোনো কিছু দেখিনি যার সাথে এবং  আগে ও পরে আল্লাহ ছিলেন না । সূরা আনআমের ১০৩ নম্বর আয়াতেও মহান আল্লাহ বলেছেন, চোখ তাঁকে দেখতে পারে না, কিন্তু তিনি সব চোখ দেখতে পান ।

এ আয়াত থেকে আমাদের মনে রাখা দরকার:
এক. মহান আল্লাহকে জানা বা বোঝার জন্যে তাঁর মহিমা ও ক্ষমতার নিদর্শনের দিকে লক্ষ্য করা উচিত এবং সমস্ত সৃষ্টি  জগতই   আল্লাহর নিদর্শন ।
দুই. আল্লাহর কাছ থেকে অযৌক্তিক কিছু আশা করা ঠিক নয়, এ ধরনের আশা এবং আল্লাহ সম্পর্কে সব ধরনের ভুল ধারণার ব্যাপারে তওবা করা উচিত ।

সূরা আ'রাফের ১৪৪ ও ১৪৫ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে-
  قَالَ يَا مُوسَى إِنِّي اصْطَفَيْتُكَ عَلَى النَّاسِ بِرِسَالَاتِي وَبِكَلَامِي فَخُذْ مَا آَتَيْتُكَ وَكُنْ مِنَ الشَّاكِرِينَ (144) وَكَتَبْنَا لَهُ فِي الْأَلْوَاحِ مِنْ كُلِّ شَيْءٍ مَوْعِظَةً وَتَفْصِيلًا لِكُلِّ شَيْءٍ فَخُذْهَا بِقُوَّةٍ وَأْمُرْ قَوْمَكَ يَأْخُذُوا بِأَحْسَنِهَا سَأُرِيكُمْ دَارَ الْفَاسِقِينَ (145)

"আল্লাহ বললেন, হে মূসা! নিশ্চয়ই আমি তোমাকে আমার বাণী ও বাক্যালাপের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছি। তাই, আমি যা দিয়েছি তা অর্থাৎ তাওরাত কিতাব গ্রহণ কর ও কৃতজ্ঞ হও।" (৭:১৪৪)
"তাওরাত গ্রন্থে আমি তোমার জন্যে সব বিষয়ের উপদেশ ও সব বিষয়ে বিবৃতি লিখে দিয়েছি। অতএব, তুমি তা দৃঢ়ভাবে ধারণ কর এবং তোমার জাতির লোকদেরকে তার কল্যাণকর বিষয়গুলোকে গ্রহণ করতে বল। আমি শিগগিরই তোমাকে সত্য ত্যাগীদের বাসস্থান দেখাবো।" (৭:১৪৫)

তুর পাহাড়ে ৪০ দিন অবস্থানকালে হযরত মূসা (আ.)’র কাছে মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে তাওরাত গ্রন্থ নাজেল হয়। পাথরের ফলকে এ ঐশী প্রত্যাদেশ নাজেল হয়েছিল। আল্লাহ এ গ্রন্থের বিধানগুলো কঠোরভাবে আঁকড়ে ধরতে এবং বনী ইসরাইলকে এর বিধানগুলো মেনে চলতে বলার জন্যে  হযরত মূসা  (আ.)’র প্রতি আহবান জানান।

এ দুই আয়াত থেকে আমাদের মনে রাখা দরকারঃ
এক.  ফেরাউনের মতো অত্যাচারী ও খোদাদ্রোহী শাসকদের রাষ্ট্র ব্যবস্থা উৎখাত ও খোদায়ী রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার পর  এ রাষ্ট্রে অবশ্যই খোদায়ী বিধি বিধান বাস্তবায়ন করতে হবে ।
দুই.   ঐশী কিতাব বা খোদায়ী গ্রন্থ লাভের জন্যে বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা উচিত। আর এ ধরনের মহা অনুগ্রহের জন্যে কৃতজ্ঞতা হিসেবে আল্লাহর বিধানগুলো মানা উচিত, কিছু নৈতিক উপদেশ প্রচারই এ জন্যে যথেষ্ট নয় ।

 সূরা আরাফের ১৪৬ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে-
  سَأَصْرِفُ عَنْ آَيَاتِيَ الَّذِينَ يَتَكَبَّرُونَ فِي الْأَرْضِ بِغَيْرِ الْحَقِّ وَإِنْ يَرَوْا كُلَّ آَيَةٍ لَا يُؤْمِنُوا بِهَا وَإِنْ يَرَوْا سَبِيلَ الرُّشْدِ لَا يَتَّخِذُوهُ سَبِيلًا وَإِنْ يَرَوْا سَبِيلَ الْغَيِّ يَتَّخِذُوهُ سَبِيلًا ذَلِكَ بِأَنَّهُمْ كَذَّبُوا بِآَيَاتِنَا وَكَانُوا عَنْهَا غَافِلِينَ (146)

"পৃথিবীতে যারা অন্যায়ভাবে গর্ব করে বেড়ায়, আমি শিগগিরই তাদেরকে আমার নিদর্শন হতে বিমুখ করবো এবং যদি তারা আমার সমস্ত নিদর্শন দেখে, তবুও তারা এতে বিশ্বাস করবে না, যদি তারা সুপথ দেখে তবুও তারা ঐ পথ গ্রহণ করবে না এবং যদি ভুল পথ দেখে, তবে তারা সে পথই গ্রহণ করবে ; এটা এ জন্যে যে তারা আমার নিদর্শনাবলীতে অবিশ্বাস করেছিল এবং ওতে অমনোযোগী ছিল।" (৭:১৪৬)

আগের আয়াতে আল্লাহর বিধান  দৃঢ়ভাবে মেনে চলা ও তা বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব দেয়ার পর এ আয়াতে বলা হচ্ছে - যারা আল্লাহর বিধানের কাছে নতি স্বীকার করে না এবং অহংকার করে, তারা সত্য গ্রহণে প্রস্তুত নয় । এমনকি তাঁরা মহান আল্লাহর ক্ষমতার অনেক নিদর্শন দেখা এবং সত্যের পথকে বোঝার পরও সত্য গ্রহণ করে না। আসলে তারা উন্নতি ও পূর্ণতার পথের সন্ধান করে না এবং তারা যেখানেই যাক না কেন সত্য থেকে পালিয়ে বেড়ায়।

এ আয়াত থেকে আমাদের মনে রাখা দরকারঃ
এক.  মহান আল্লাহর নিদর্শনকে অস্বীকার করা ও আল্লাহর বিরুদ্ধে বিদ্রোহের মূল উৎস হলো অহংকার বা গর্ব ।
দুই. আল্লাহর মোকাবেলায় অহংকারের পরিণতি হলো সুপথ থেকে বঞ্চিত হওয়া এবং আল্লাহ বিনা কারণে কারো ওপর অনুগ্রহ করা বন্ধ করেন না। #


Thursday, May 1, 2014

আমি না দেখেই বিশ্বাস করি আল্লাহ আছেন-আছে জান্নাত জাহান্নাম..কারণ-

আমি না দেখেই বিশ্বাস করি আল্লাহ আছেন-আছে জান্নাত জাহান্নাম..কারণ-


``জ্ঞানী মানুষও চিন্তার সংকীর্ণতার কারণে কীভাবে মূর্খের মতো আচরণ করতে পারে তার একটা উদাহরণ হলো শিরোনামে দেওয়া বক্তব্য। উনারা বলে থাকেন ইসলাম কি আজব আজব কথাবার্তা বলে। কি নাকি বেহেশত, দোজখ, জিন, ফেরেশতা আছে। এসব কি কেউ কখনো দেখেছে? ''


গতকাল স্টুডেন্টকে পড়াতে গিয়ে এ চিন্তার অসারতার নতুন একটা দিক খুঁজে পেলাম। যখন বলছিলাম একটা বস্তুকে উপরে ছেড়ে দিলে নিচে নামে কেন। কারণ পৃথিবীর অভিকর্ষ। নিউটনের মহাকর্ষ সূত্রানুযায়ী প্রত্যেক বস্তুই একে অপরকে নিজ দিকে আকর্ষণ করে। এমনকি দুটো কলম পাশাপাশি রেখে দিলেও এরাও আসলে পরস্পরকে আকর্ষণ করে। কিন্তু আকর্ষণের পরমিাণ অনুভূত হবার চেয়ে অনেক কম হওয়ায় দেখা যায়না বা বোঝাই যায়না। তাই বলে কি তাদের আকর্ষণ মিথ্যা????!!!!
 
অসংখ্য উদাহরণ দেওয়া যায়। 

একইভাবে 'চোখে দেখিনা' দোহাই দিয়ে কোনভাবেই জান্নাত জাহান্নামকে অস্বীকার করা যায়না। পৃথিবীর অস্তিত্ব যেমন বাস্তব তার চেয়েও বাস্তব পরকাল। পৃথিবীর সকল কাজ-কর্মের প্রতিফল পাবার জন্যে আরেকটা জগত প্রয়োজন যেখানে এখানে না পাওয়া প্রাপ্য সঠিকভাবে ন্যায় বিচারের মাধ্যমে দেওয়া হবে। প্রকৃত অপরাধীরা শাস্তি পাবে। যারা মহান কাজ সম্পাদন করেও এখানে পুরস্কার পাননি তাদের পুরস্কৃত করা হবে। যারা একাই অসংখ্য মানুষের ক্ষতিসাধন করেছে তাদের থেকে কড়ায় গন্ডায় হিসেব নেওয়া হবে। একমাত্র পরকালের ভয় আর আল্লাহভীতিই মানুষকে অপরাধ থেকে দূরে রাখতে পারে। যে মনে সে যে করছে তার হিসেব দিতে হবে আর যে উল্টোটা মনে করছে দুজনের কাজের প্রকৃতি একই হওয়া সম্ভব নয়। প্রথমজন অবশ্যই অন্যের জন্যে ও সমাজের জন্যে ক্ষতিকর কাজ এড়িয়ে যাবে। 

এছাড়া যে আল্লাহ কুরআনে এত সুন্দর গুছিয়ে মানবজীবনের সব বিষয় আলেঅচনা করেছেন, সমাধান দিয়েছেন নির্ভুল অসংখ্য বৈজ্ঞানিক তথ্য দিয়েছেন তাঁর আর একটি কথা পরকালের ব্যাপারে সেটা বিশ্বাস না করাই অস্বাভাবিক।
 
যে মুহাম্মাদ সা. জীবনে মিথ্যা বলেনি, বানিয়ে কোন কথা বলেননি যার সাক্ষ্য তাঁর ঘোর বিরোধীরাও দিত তিনি পরকালের ব্যাপারে উদ্ভট একটা কথা বলেছেন এটা মেনে নেওয়াও হাস্যকর ও অযৌক্তিক।