আল্লাহ্ বলেন وَلِلَّهِ الْأَسْمَاءُ الْحُسْنَى فَادْعُوهُ بِهَا
“আল্লাহর অনেক সুন্দর সুন্দর নাম আছে, সেই নামের মাধ্যমে তোমরা তাঁকে
ডাক। (সূরা আরাফঃ ১৮০) আবু হুরায়রা (রা:) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
إِنَّ لِلَّهِ تَعَالَى تِسْعَةً وَتِسْعِينَ اسْمًا مِائَةً إلاَّ
واَحِداً مَنْ أَحْصَاهَا دَخَلَ الْجَنَّةَ “আল্লাহ তায়ালার এমন
নিরানব্বইটি (এক কম একশ) নাম রয়েছে, যে উহা গণনা করবে সে জান্নাতে প্রবেশ
করবে। (বুখারী ও মুসলিম)
হাদীছে যে বলা হয়েছে: “যে ব্যক্তি উহা গণনা করবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।” এর অর্থ হচ্ছে:
(১) শব্দ ও সংখ্যা সমূহ গণনা করা।
(২) উহার অর্থ ও তাৎপর্য অনুধাবন করা, তার প্রতি ঈমান রাখা ও সে অনুযায়ী
আমল করা। যেমন: الْحَكِيمُ মহা বিজ্ঞ। বান্দা যখন নিজের যাবতীয় বিষয় তাঁর
কাছে সমর্পণ করবে তখনই এ নামের উপর আমল হবে। কেননা সকল বিষয় তাঁরই হেকমত ও
পাণ্ডিত্যেই হয়ে থাকে। বান্দা যখন বলবে الْقُدُّوسُ বা মহা পবিত্র, তখন
অন্তরে অনুভব করবে যে, তিনি যাবতীয় দোষ-ত্র“টি থেকে পূত পবিত্র।
(৩) নামসমূহ উল্লেখ করে দুআ করা। এ দুআ দুপ্রকারঃ (ক) প্রশংসা ও ইবাদতের দুআ (খ) প্রয়োজন পূরণের জন্য প্রার্থনা।
কুরআন ও সুন্নাহ্ অনুসন্ধান করে আল্লাহর যে সমস্ত নাম জানা যায় তা নিম্নরূপ: |
আল্লাহর
নাম সমূহ
|
নামের ব্যাখ্যা
|
الله
|
( আল্লাহ) আল্লাহ্। তিনি সৃষ্টিকুলের ইবাদত ও
দাসত্বের অধিকারী। তিনিই মাবূদ-উপাস্য, তাঁর কাছে বিনীত হতে হয়,
রুকূ-সিজদাসহ যাবতীয় ইবাদত-উপাসনা তাঁকেই নিবেদন করতে হয়। |
الرَّحْمَنُ
|
(আর রাহমান) পরম দয়ালু, সৃষ্টির সকলের প্রতি
ব্যাপক ও প্রশস্ত দয়ার অর্থবোধক নাম। এ নামটি আল্লাহর জন্যে সবিশেষ, তিনি
ব্যতীত কাউকে রহমান বলা জায়েয নয়। |
الرَّحِيمُ
|
(আর রাহীম) পরম করুণাময়, তিনি মুমিনদেরকে
দুনিয়া ও আখেরাতে ক্ষমাকারী করুণাকারী, তাঁর ইবাদতের প্রতি মুমিনদের
হেদায়াত করেছেন। জান্নাত দিয়ে আখেরাতে তাদেরকে সম্মানিত করবেন। |
العَفُوُ
|
আল আফুউ) ক্ষমাকারী, তিনি বান্দার গুনাহ মিটিয়ে দেন তাকে ক্ষমা করে দেন, অপরাধ করে শাস্তিযোগ্য হওয়া সত্বেও তিনি শাস্তি দেন না। |
الغَفُوْرُ
|
(আল গাফূর) মহাক্ষমাশীল, তিনি বান্দার অন্যায় গোপন রাখেন, তাকে লাঞ্ছিত করেন না এবং শাস্তিও দেন না। |
الْغَفَّارُ
|
(আল গাফফার) অত্যধিক ক্ষমাকারী, গুনাহগার বান্দা ক্ষমা প্রার্থনা করলে তিনি তাকে ক্ষমা করে দেন। |
الرَّءُوفُ
|
( আর রাউফ) অতিব দয়ালু, রহমত বা দয়ার সাধারণ
অর্থের তুলনায় এ শব্দটি অধিক ও ব্যাপক অর্থবোধক তাঁর এই দয়া দুনিয়াতে
সৃষ্টির সকলের জন্যে এবং আখেরাতে কতিপয় মানুষের জন্যে। আর তারা হচ্ছে
আল্লাহর বন্ধু মুমিনগণ। |
الحَلِيمُ
|
(আল হালীম) মহাসহিষ্ণু, তিনি বান্দাদেরকে
তাৎক্ষণিক শাস্তি দেন না; অথচ তিনি শাস্তি দিতে সক্ষম। বরং তারা মাফ চাইলে
তিনি তাদেরকে মাফ করে দেন। |
التَّوَّابُ
|
(আত তাওয়াব) তওবা কবূলকারী, তিনি বান্দাদের মধ্যে যাকে চান তওবা করার তাওফীক দেন এবং তাদের তওবা কবূল করেন। |
السِّتِّيْرُ
|
(আস সিত্তীর)[1]
দোষ-ত্রুটি গোপনকারী, তিনি বান্দার অন্যায় গোপন রাখেন, সৃষ্টিকুলের সামনে
তাদেরকে লাঞ্ছিত করেন না। তিনি ভালবাসেন বান্দা নিজের এবং অন্যের
দোষ-ত্রুটি গোপন রাখুক, তাহলে তিনিও তাদের অপরাধ গোপন রাখবেন। |
الغَنِيُّ
|
(আল গানী) ঐশ্বর্যশালী, তিনি সৃষ্টিকুলের
কারো মুখাপেক্ষী নন। কেননা তিনি নিজে পরিপূর্ণ, তাঁর গুণাবলী পরিপূর্ণ।
সৃষ্টির সকলেই ফকীর, অনুগ্রহ ও সাহায্যের জন্যে তাঁর উপর নির্ভরশীল। |
الكَرِيمُ
|
(আল কারীম) মহা অনুগ্রহশীল, সর্বাধিক
কল্যাণকারী, সুমহান দানকারী। যাকে যা চান যেভাবে ইচ্ছা দান করেন। চাইলেও
দান করেন, না চাইলেও দান করেন। গুনাহ মাফ করেন, দোষ-ত্রুটি গোপন রাখেন। |
الأَكْرَمُ
|
(আল আকরাম) সর্বাধিক সম্মানিত, সর্বোচ্চ
সম্মানের অধিকারী, তাতে তাঁর কোন দৃষ্টান্ত নেই। যাবতীয় কল্যাণ তাঁর নিকট
থেকেই আসে। নিজ অনুগ্রহে মুমিনদের পুরস্কৃত করবেন। অবাধ্যদের সুযোগ দেন,
ন্যায়নিষ্ঠার সাথে তাদের হিসাব নিবেন। |
الْوَهَّابُ
|
(আল ওয়াহহাব) মহান দাতা, বিনিময় ব্যতীত বিনা উদ্দেশ্যেই অত্যধিক দান করেন। না চাইতেও অনুগ্রহ করেন। |
الْجَوَادُ
|
(আল জাওয়াদ) উদার দানশীল, সৃষ্টিকুলকে
উদারভাবে অধিক দান ও অনুগ্রহ করেন। তাঁর উদারতা ও অনুগ্রহ বিশেষভাবে
মুমিনদের প্রতি বেশী হয়ে থাকে। |
الْوَدُودُ
|
(আল ওয়াদূদ) মহত্তম বন্ধু, তিনি তাঁর মুমিন
বন্ধুদের ভালবাসেন, মাগফিরাত ও নেয়ামত দিয়ে তিনি তাদের প্রতি ভালবাসা
প্রকাশ করেন। তিনি তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হন এবং তাদের আমল কবূল করেন।
তাদেরকে পৃথিবীবাসীর কাছেও ভালবাসার পাত্র করেন। |
الْمُعْطِي
|
(আল মু’তী) দানকারী, তাঁর অফুরন্ত ভান্ডার
থেকে সৃষ্টিকুলের যাকে চান যা চান প্রদান করেন। তাঁর দানের শ্রেষ্ঠাংশ তাঁর
(মুমিন) বন্ধুদের জন্যে হয়ে থাকে। তিনিই সকল বস্তু সৃষ্টি করেছেন ও তাতে
আকৃতি প্রদান করেছেন। |
الوَاسِعُ
|
(আল ওয়াসি’) মহা প্রশস্ত, তাঁর গুণাবলী
সুপ্রশস্ত। কেউ যথাযথভাবে তাঁর গুণগান গাইতে পারবে না। তাঁর মহত্ব ও রাজত্ব
সুবিশাল প্রশস্ত। তাঁর মাগফিরাত ও করুণা সুপ্রশস্ত। দয়া ও অনুগ্রহ
সুপ্রশস্ত। |
الْمُحْسِِنُ
|
(আল মুহসিন) মহা অনুগ্রহকারী, তিনি স্বীয়
সত্বা, গুণাবলী ও কর্মে অতি উত্তম। তিনি সুন্দরভাবে সকল বস্তু সৃষ্টি
করেছেন এবং সৃষ্টিকুলের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন। |
الرازقُ
|
(আর রাযিক) রিযিকদাতা, তিনি সৃষ্টিকুলের
সকলকে রিযিক দিয়ে থাকেন। তিনি জগত সৃষ্টির পূর্বে তাদের রিযিক নির্ধারণ
করেছেন। আর পরিপূর্ণরূপে সেই রিযিক তাদের প্রদান করার দায়িত্ব গ্রহণ
করেছেন। |
الرَّزَّاقُ
|
(আর রাযযাক) সর্বাধিক রিযিকদাতা, তিনি
সৃষ্টিকুলকে অধিকহারে রিযিক দিয়ে থাকেন। তাঁর কাছে প্রার্থনা না করতেই তিনি
রিযিকের ব্যবস্থা করেন। এমনকি অবাধ্যদেরকেও তিনি রিযিক দিয়ে থাকেন। |
اللَطِيْفُ
|
(আল লাত্বীফ) সুক্ষ্ণদর্শী, সকল বিষয়ের
সুক্ষ্ণাতিসুক্ষ্ণ জ্ঞান আছে তাঁর কাছে। কোন কিছুই গোপন থাকেনা তাঁর নিকট।
তিনি বান্দাদের নিকট এত গোপনীয়ভাবে কল্যাণ ও উপকার পৌঁছিয়ে থাকেন যে তারা
ধারণাই করতে পারে না। |
الخَبيْرُ
|
(আল খাবীর) মহাসংবাদ রক্ষক, তিনি যেমন সকল
বস্তুর প্রকাশ্য বিষয়ের জ্ঞান রাখেন, অনুরূপভাবে তাঁর জ্ঞান সবকিছুর গোপন ও
অপকাশ্য সংবাদকেও বেষ্টন করে আছে। |
الْفَتَّاحُ
|
(আল ফাত্তাহ) উন্মোচনকারী, তিনি তাঁর
রাজত্বের ভান্ডার এবং করুণা ও রিযিক থেকে যা ইচ্ছা বান্দাদের জন্যে খুলে
দেন। তাঁর জ্ঞান ও হিকমত অনুযায়ীই তিনি তা উন্মুক্ত করে থাকেন। |
العَلِيمُ
|
(আল আ’লীম) মহাজ্ঞানী, তাঁর জ্ঞান বেষ্টন করে
আছে যাহের-বাতেন, প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য, অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের যাবতীয়
বিষয়কে। কোন কিছুই তাঁর কাছে গোপন বা লুকায়িত নয়। |
البَرُّ
|
(আল বার) মহাকল্যাণদাতা, তিনি সৃষ্টিকুলকে
প্রশস্ত কল্যাণদানকারী। তিনি প্রদান করেন কিন্তু তাঁর দানকে কেউ গণনা করতে
পারে না। তিনি নিজ অঙ্গীকারে সত্যবাদী। তিনি বান্দাকে ক্ষমা করেন, তাকে
সাহায্য করেন ও রক্ষা করেন। তিনি বান্দার অল্পদানও গ্রহণ করেন এবং তার
ছওয়াবকে বৃদ্ধি করতে থাকেন। |
الحَكِيْمُ
|
(আল হাকীম) মহাবিজ্ঞ, তিনি নিজ জ্ঞানে সকল
বস্তুকে উপযুক্তভাবে স্থাপন করেন। তাঁর পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনায় কোন ত্রুটি
হয় না ভুল হয় না। |
الْحَكَمُ
|
(আল হাকাম) মহাবিচারক, তিনি ন্যায়নিষ্ঠার
সাথে সৃষ্টিকুলের বিচার করবেন। কারো প্রতি অত্যাচার করবেন না। তিনিই
সম্মানিত কিতাব (সংবিধান) নাযিল করেছেন, যাতে করে উক্ত সংবিধান অনুযায়ী
মানুষের মাঝে বিচার কার্য সম্পাদন করা যায়। |
الشَّاكِرُ
|
(আশ শাকির) কৃতজ্ঞতাকারী, যে বান্দা তাঁর
আনুগত্য করে ও তাঁর গুণগান গায় তিনি তার প্রশংসা করেন। আমল যত কম হোক না
কেন তিনি তাতে প্রতিদান দেন। যারা তাঁর নেয়ামতের শুকরিয়া করে বিনিময়ে তাদের
নেয়ামতকে দুনিয়াতে আরো বৃদ্ধি করে দেন এবং পরকালে প্রতিদান বৃদ্ধি করবেন। |
الشَّكُورُ
|
(আশ শাকুর) কৃতজ্ঞতাপ্রিয়, বান্দার সামান্য
আমল তাঁর কাছে পবিত্রময়। তিনি তাতে বহুগুণ ছওয়াব প্রদান করেন। বান্দার
প্রতি আল্লাহর কৃতজ্ঞতা করার অর্থ হচ্ছে তার কর্মের প্রতিদান দেয়া এবং
আনুগত্য গ্রহণ করা। |
الجَمِيْلُ
|
(আল জামীল) অতিব সুন্দর, তিনি নিজ সত্বা, নাম ও গুণাবলীতে এবং কর্মে অতিব সুন্দর। সৃষ্টির যে কোন সৌন্দর্য তাঁর পক্ষ থেকেই প্রদত্ত। |
الْمَجِيدُ
|
(আল মাজীদ) মহাগৌরবান্বিত সপ্তাকাশে ও পৃথিবীতে গর্ব ও অহংকার, সম্মান ও মর্যাদা এবং উচ্চতা ও শ্রেষ্ঠত্ব একমাত্র তাঁরই। |
الْوَلِيُّ
|
(আল ওয়ালী) মহা অভিভাবক, তিনি সৃষ্টি জগতের
প্রতিটি বিষয়ের পরিচালনাকারী, রাজত্বে কর্তৃত্বকারী। তিনিই তাঁর মুমিন
বন্ধুদের সাহায্যকারী, মদদকারী ও রক্ষাকারী। |
الْحَمِيدُ
|
(আল হামীদ) মহাপ্রশংসিত, তিনি নিজ নাম,
গুণাবলী ও কর্মে সর্বোচ্চ প্রশংসিত। সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা ও সচ্ছলতা-অভাবে
তাঁরই প্রশংসা। তিনিই সকল প্রশংসা ও স্তুতির হকদার। কেননা তিনি সকল
পরিপূর্ণ গুণাবলীর অধিকারী। |
المَوْلَى
|
(আল মাওলা) অভিভাবক, তিনি পালনকর্তা, বাদশা, নেতা। তিনি তাঁর মুমিন বন্ধুদের সাহায্য ও সহযোগিতাকারী। |
النَّصِيْرُ
|
(আন নাসীর) সাহায্যকারী, তিনি যাকে ইচ্ছা নিজ
সাহায্য দ্বারা শক্তিশালী করেন। তিনি যাকে মদদ করেন তাকে কেউ পরাজিত করতে
পারে না। তিনি যাকে লাঞ্ছিত করেন তাকে কেউ সাহায্য করতে পারে না। |
السَّمِيعُ
|
মহাশ্রবণকারী, তাঁর শ্রবণ প্রত্যেক গোপনীয়
সলা-পরামর্শকে বেষ্টন করে, প্রত্যেক প্রকাশ্য বিষয়কে বেষ্টন করে; বরং সকল
আওয়াজকে বেষ্টন করে তা যতই উঁচু হোক অথবা নীচু বা ক্ষীণ হোক। |
البَصِيرُ
|
(আল বাসীর) মহাদ্রষ্টা, তাঁর দৃষ্টি জগতের
সকল কিছুকে বেষ্টন করে আছে। দৃশ্য-অদৃশ্য সকল কিছুই তিনি দেখতে পান। যতই
গোপন বা প্রকাশ্য হোক না কেন অথবা ক্ষুদ্র ও বৃহৎ হোক না কেন তাঁর অগোচরে
কিছুই থাকে না। |
الشَّهِيدُ
|
(আশ শাহীদ) মহাস্বাক্ষী, তিনি সৃষ্টিকুলের
পর্যবেক্ষক। তিনি নিজের একত্ববাদ ও ন্যায়-ইনসাফ প্রতিষ্ঠার স্বাক্ষ্য
দিয়েছেন। মুমিনগণ তাঁর একত্ববাদ ঘোষণা করলে তিনি তাদের স্বাক্ষী হন। তিনি
তাঁর রাসূলগণ এবং ফেরেশতাদের জন্যেও স্বাক্ষী| |
الرَّقِيبُ
|
(আর রাক্বীব) মহাপর্যবেক্ষক, তিনি
সৃষ্টিকুলের সবকিছুই জানেন। তিনি তাদের কর্ম সমূহ গণনা করে রাখেন। কারো
চোখের পলক বা অন্তরের গোপন বাসনা তাঁর জ্ঞান বহির্ভূত নয়। |
الرَّفِيْقُ
|
(আর রাফীক্ব) মহান বন্ধু, দয়ালু, তিনি নিজের
কর্মে খুব বেশী নম্রতা অবলম্বন করেন। তিনি সৃষ্টি ও নির্দেশের বিষয়
ক্রমান্বয়েও ধীরস্থীরভাবে সম্পন্ন করেন। তিনি বান্দাদের সাথে কোমল ও দয়ালু
আচরণ করেন। সাধ্যের বাইরে তাদের উপর কোন কিছু চাপিয়ে দেন না। তিনি
নম্র-ভদ্র বান্দাকে ভালবাসেন। |
القَرِيْبُ
|
(আল ক্বরীব) সর্বাধিক নিকটবর্তী, তিনি জ্ঞান ও
ক্ষমতার মাধ্যমে সকল সৃষ্টির নিকটবর্তী। সাহায্য ও দয়ার মাধ্যমে মুমিন
বন্দাদের নিকটবর্তী। সেই সাথে তিনি সপ্তাকাশের উপর সুমহান আরশে সমুন্নত।
তিনি স্বসত্বায় মাখলুকের সাথে মিশে থাকেন না। |
المُجِيبُ
|
(আল মুজীব) কবূলকারী, আহবানে সাড়াদানকারী,
তিনি আহবানকারীর আহবানে এবং প্রার্থনকারীর প্রার্থনায় সাড়া দিয়ে থাকেন।
তাঁর জ্ঞান ও হিকমত অনুযায়ীই তিনি সাড়া দিয়ে থাকেন। |
الْمُقِيْتُ
|
(আল মুক্বীত) ভরণ-পোষণ দানকারী, খাদ্যদাতা,
তিনি রিযিক ও খাদ্য সৃষ্টি করেছেন এবং তা মাখলুকের কাছে পৌঁছে দেয়ার
দায়িত্বও নিয়েছেন। তিনি বান্দার রিযিক ও আমল লোকসান ও ত্রুটি ছাড়াই সংরক্ষণ
করেন। |
الْحَسِيبُ
|
(আল হাসীব) মহান হিসাব রক্ষক, যথেষ্ট,
বান্দার দ্বীন-দুনিয়ার যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের জন্যে তিনিই যথেষ্ট।
তাঁর যথেষ্টতার শ্রেষ্ঠাংশ মুমিনদের জন্যে নির্ধারিত। মানুষ দুনিয়ায় যে আমল
সম্পাদন করেছে তিনি তার হিসাব নিবেন। |
المُؤْمِنُ
|
(আল মু’মিন) নিরাপত্তাদানকারী, বিশ্বাসী,
নবী-রাসূল এবং তাঁদের অনুসারীদের সত্যতার সাক্ষী দিয়ে তিনি তাদের সত্যায়ন
করেছেন। তাঁদের সত্যতাকে বাস্তবায়ন করার জন্যে যে দলীল-প্রমাণ দিয়েছেন তার
সত্যায়ন করেছেন। দুনিয়া-আখেরাতের সকল নিরাপত্তা তাঁরই দান। মুমিনদের
নিরাপত্তা দিয়েছেন যে, তিনি তাদের প্রতি যুলুম করবেন না, তাদেরকে শাস্তি
দিবেন না এবং কিয়ামতের বিভীষিকাময় অবস্থায় তাদেরকে বিপদে ফেলবেন না। |
الْمَنَّانُ
|
(আল মান্নান) অনুগ্রহকারী, দানকারী, তিনি অঢেল দান করেন, বড় বড় নেয়ামত প্রদান করেন। সৃষ্টির উপর পরিপূর্ণরূপে অনুগ্রহ করেন। |
الطَّيِّبُ
|
(আত ত্বইয়েব) মহা পবিত্র, তিনি অতি পবিত্র,
যাবতীয় দোষ-ত্রুটি থেকে মুক্ত। যাবতীয় সৌন্দর্য, শ্রেষ্ঠত্ব ও পরিপূর্ণতা
তাঁরই। তিনি সৃষ্টিকুলকে অফুরন্ত কল্যাণ প্রদান করেন। আমল ও দান-সাদকা
একনিষ্ঠভাবে তাঁর উদ্দেশ্যে না হলে এবং হালাল ও পবিত্র উপার্জন থেকে না হলে
তিনি তা কবূল করবেন না। |
الشَّافِي
|
(আশ শাফী) আরোগ্য দানকারী, তিনি অন্তর ও
অঙ্গ-প্রতঙ্গের যাবতীয় ব্যাধির আরোগ্য দানকারী। আল্লাহ্ যা দিয়েছেন তা
ব্যতীত বান্দার হাতে কোন নিরাময়ক উপকরণ নেই। আরোগ্য বা রোগমুক্তির ক্ষমতা
একমাত্র তাঁর হাতেই আছে। |
الْحَفِيظُ
|
(আল হাফীয) মহারক্ষক, তিনি নিজ অনুগ্রহে
মুমিন বান্দার আমল সমূহ হেফাযত ও সংরক্ষণ করে থাকেন। তাঁর অসীম ক্ষমতা
দ্বারা মাখলুকাতকে লালন-পালন করেন এবং রক্ষণাবেক্ষণ করেন। |
الْوَكِيلُ
|
(আল ওয়াকীল) মহা প্রতিনিধি, তিনি সমস্ত জগতের
দায়িত্ব নিয়েছেন, সৃষ্টি ও পরিচালনার কর্তব্যভার গ্রহণ করেছেন। অতএব
সৃষ্টিকুলকে অস্তিত্ব প্রদান ও মদদ করার তিনিই যিম্মাদার। |
الْخَلاَّقُ
|
(আল খাল্লাক্ব) সৃষ্টিকারী, আল্লাহ্ তাআলা
যে অগণিত বস্তু সৃষ্টি করেন শব্দটি তার অর্থই বহণ করছে। তিনি সৃষ্টি করতেই
আছেন এবং সৃষ্টি করার এই বিশাল ক্ষমতা তাঁর মধ্যে চিরকালীন। |
الخَالِقُ
|
(আল খালিক্ব) স্রষ্টা, তিনি পূর্ব দৃষ্টান্ত ছাড়াই মাখলুকাতকে সৃষ্টি করেছেন। |
البَارِئُ
|
(আল বারী) সৃজনকর্তা, তিনি যা নির্ধারণ করেছেন এবং যা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাকে অনস্তিত্ব থেকে অস্তিত্বে রূপ দান করেছেন। |
المُصَوِّرُ
|
(আল মুসাব্বির) অবয়বদানকারী, আল্লাহ্ তা’আলা নিজের প্রজ্ঞা, জ্ঞান ও করুণা অনুযায়ী সৃষ্টিকুলকে ইচ্ছামত আকৃতি ও অবয়ব দান করেছেন। |
الرَّبُّ
|
(আর রব) প্রভু, প্রতিপালক, তিনিই সৃষ্টিকুলকে
তাঁর নেয়ামতরাজী দিয়ে প্রতিপালন করেন, তাদেরকে ধীরে ধীরে গড়ে তোলেন। তিনি
মুমিন বন্ধুদের অন্তর যেভাবে সংশোধন হয় সেভাবে যত্নসহকারে লালন-পালন করেন।
তিনিই মালিক, স্রষ্টা, নেতা ও পরিচালক। |
العَظِيمُ
|
(আল আযীম) সুমহান, তিনি নিজ সত্বা, নাম ও
গুণাবলীতে সুমহান গৌরবান্বিত। তাই সৃষ্টিকুলের আবশ্যক হচ্ছে তাঁর মহত্ব
ঘোষণা করা, তাঁকে সম্মান করা এবং তাঁর আদেশ-নিষেধের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে
তা মেনে চলা। |
القَاهِرُ/ القَهَّارُ
|
(আল কাহির/আল কাহ্হার) পরাজিতকারী, অসীম
ক্ষমতাবান, তিনি বান্দাদেরকে বাধ্যকারী, সৃষ্টিকুলেকে তাঁর দাসে পরিণতকারী,
সকলের উপর সর্বোচ্চ। তিনিই বিজয়ী, তাঁর জন্যেই সকল মস্তক নত হয়, সব
মুখমন্ডল অবনমিত হয়। |
المُهَيْمِنُ
|
(আল মুহাইমিন) রক্ষক, কর্তৃত্বকারী, তিনি সকল বস্তুকে পরিচালনাকারী, সংরক্ষণকারী, সাক্ষী এবং সব কিছুকে বেষ্টনকারী। |
العَزِيزُ
|
(আল আযীয) মহাপরাক্রমশালী, ক্ষমতা ও শক্তির
যাবতীয় বিষয় তাঁরই অধিকারে। তিনি প্রতাপশালী- তাঁকে কেউ পারজিত করতে পারে
না। তিনি বাধাদানকারী- তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন, কর্তৃত্ব ও বিজয় তাঁর
হাতেই- তাঁর অনুমতি ছাড়া কোন কিছুই নড়তে পারে না। |
الجَبَّارُ
|
(আল জাব্বার) মহাশক্তিধর, তিনি যা চান তাই
হয়, সৃষ্টিকুল তাঁর কাছে পরাজিত, তাঁর মহত্বের কাছে অবনমিত, তাঁর হুকুমের
গোলাম। তিনি ব্যাথাতুর ভগ্নের সহায়তা করেন, অভাবীকে স্বচ্ছল করেন, কঠিনকে
সহজ করেন, অসুস্থ ও বিপদাপন্নকে উদ্ধার করেন। |
المُتَكَبِّرُ
|
(আল মুতাকাব্বির) মহাগৌরবান্বিাত তিনি মহান,
সকল দোষ-ত্রুটির উর্ধ্বে। তিনি বান্দাদের প্রতি অত্যাচারের অনেক উর্ধ্বে।
সৃষ্টির অবাধ্যদেরকে পরাজিতকারী। গর্ব-অহংকারের একক অধিকারী তিনিই। |
الكَبيرُ
|
(আল কাবীর) অতীব মহান, তিনি নিজ সত্বা,
গুণাবলী ও কর্মে অতিব মহান ও বড়। তাঁর চেয়ে বড় কোন বস্তু নেই। তাঁর মহত্ব ও
শ্রেষ্ঠত্বের সামনে সব কিছুই ক্ষুদ্র ও তুচ্ছ। |
الحَيـِِيُّ
|
(আল হায়িই) লজ্জাশীল, তাঁর সম্মানিত সত্বা ও
বিশাল রাজত্বের সাথে সামঞ্জস্যশীল পন্থায় তিনি লজ্জা করেন। আল্লাহর লজ্জা
হচ্ছে তাঁর দান, করুণা, উদারতা ও সম্মান। |
الحَيُّ
|
(আল হাই) চিরঞ্জীব, তিনি চিরকাল পরিপূর্ণরূপে
জীবিত। তিনি এভাবেই ছিলেন ও আছেন এবং থাকবেন। তাঁর শুরু নেই বা শেষ নেই।
জগতে প্রাণের যে অস্তিত্ব তা তাঁরই দান। |
القَيُّومُ
|
(আল কাইয়ূম) চিরস্থায়ী, তিনি নিজে নিজেই
প্রতিষ্ঠিত, তিনি সৃষ্টিকুলের কারো মুখাপেক্ষী নন। নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে যা
কিছু আছে তার সবকিছুই তাঁর মাধ্যমেই প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। সবাই তাঁর
দরবারের ভিক্ষুক। |
الْوَارِثُ
|
(আল ওয়ারিস) উত্তরাধিকারী, সৃষ্টিকুল ধ্বংস
হওয়ার পর তিনিই থাকবেন, প্রত্যেক বস্তুর মালিক ধ্বংস হওয়ার পর তা তাঁর
কাছেই ফিরে যাবে। আমাদের কাছে যা কিছু আছে তা আমানত স্বরপ আল্লাহ্
দিয়েছেন। এগুলো সবই প্রকৃত মালিক আল্লাহর কাছে একদিন ফিরে যাবে। |
الدَّيْانُ
|
(আদ দাইয়ান) মহাবিচারক, তিনি সেই সত্বা
সৃষ্টিকুল যাঁর অনুগত ও অবনমিত। তিনি বান্দাদের কর্মের বিচার করবেন। ভাল
কর্মে বহুগুণ প্রতিদান দিবেন। মন্দ কর্মে শাস্তি দিবেন অথবা তা ক্ষমা করে
দিবেন। |
المَلِكُ
|
(আল মালিক) মহান মালিক, বাদশা, আদেশ-নিষেধ ও
কর্তৃত্বের অধিকারী তিনিই। তিনি আদেশ ও কর্মের মাধ্যমে সৃষ্টিকুলকে
পরিচালনাকারী। তাঁর রাজত্ব ও পরিচালনায় তাঁর কোন শরীক নেই। |
الْمَالِكُ
|
আল (মালিক) মহান মালিক, তিনি মূলে সব কিছুর
মালিক এবং মালিকানার যোগ্যও একমাত্র তিনিই। জগত পয়দা করার সময় তিনিই মালিক,
তিনি ব্যতীত কেউ ছিলনা। সবশেষে সৃষ্টিকুল ধ্বংস হওয়ার পরও মালিকানা তাঁরই। |
الْمَلِيْكُ
|
(আল মালীক) মহান বাদশা, ব্যাপকভাবে মালিকানা ও কর্তৃত্ব তাঁরই। |
السُّبُّوْحُ
|
(আস সুব্বূহ) মহামহিম, পূতপবিত্র, তিনি সকল
দোষ-ত্রুটি থেকে পবিত্র। কেননা পরিপূর্ণতা, শ্রেষ্ঠত্ব ও সৌন্দর্যের যাবতীয়
গুণাবলী তাঁরই। |
القُدُّوسُ
|
(আল ক্বুদ্দূস) মহা পবিত্র, তিনি সবধরণের
ত্রুটি-বিচ্যুতি থেকে পবিত্র, পরিচ্ছন্ন ও নিঃষ্কলুষ। কারণ পূর্ণতা বলতে যা
বুঝায় এককভাবে তিনিই তার উপযুক্ত, তাঁর কোন দৃষ্টান্ত নেই। |
السَّلامُ
|
(আস সালাম) পরম শান্তিদাতা, তিনি স্বীয়
সত্বা, নাম, গুণাবলী ও কর্মে যে কোন ধরণের দোষ-ত্রুটি থেকে মুক্ত। দুনিয়া ও
আখেরাতের যাবতীয় শান্তি-শৃংখলা একমাত্র তাঁর নিকট থেকেই পাওয়া যায়। |
الحَقُّ
|
(আল হাক্ক) মহাসত্য, তাঁর মধ্যে কোন সন্দেহ
নেই সংশয় নেই- না তাঁর নাম ও গুণাবলীতে না তাঁর উলুহিয়্যাতে। তিনিই সত্য
মা’বূদ- তিনি ব্যতীত কোন মা’বূদ সত্য নয়। |
المُبيْنُ
|
(আল মুবীন) সুস্পষ্টকারী, প্রকাশকারী, তাঁর
একত্ববাদ, হিকমত ও রহমতের প্রতিটি বিষয় প্রকাশ্য। তিনি বান্দাদেরকে কল্যাণ ও
হেদায়াতের পথ পরিস্কার বাতলিয়ে দিয়েছেন, যাতে তারা তার অনুসরণ করে এবং
বিভ্রান্তি ও ধ্বংসের পথও সুস্পষ্ট বর্ণনা করেছেন, যাতে তারা সতর্ক থাকতে
পারে। |
القَويُّ
|
(আল ক্বাবী)মহা শক্তিধর, তিনি পরিপূর্ণ ইচ্ছা-স্বাধিনতার সাথে একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী। |
المَتِيْنُ
|
(আল মাতীন) দৃঢ়শক্তির অধিকারী, তিনি নিজ ক্ষমতা ও শক্তিতে অত্যন্ত কঠোর। কোন কাজে কষ্ট-ক্লেশ বা ক্লান্তি তাঁকে আচ্ছন্ন করে না। |
الْقَادِرُ
|
(আল ক্বাদির) সর্বশক্তিমান, তিনি সকল বস্তুর
উপর শক্তিমান, কোন কিছুই তাঁকে আপরাগ করতে পারে না- না যমীনে না আসমানে।
তিনিই সব কিছু নির্ধারণ করেছেন। |
القَدِيْرُ
|
(আল ক্বাদীর) মহাপ্রতাপশালী, এ শব্দটির অর্থ পূর্বের শব্দটিরই অনুরূপ। কিন্তু আল্ কাদীর শব্দটির মাধ্যমে আল্লাহর প্রশংসা অধিক হয়। |
الْمُقْتَدِرُ
|
(আল মুক্তাদির) মহা ক্ষমতাবান, আল্লাহর পূর্ব জ্ঞান অনুযায়ী নির্ধারণকৃত বস্তু বাস্তবায়নে ও সৃষ্টি করতে তাঁর অতিরিক্ত ক্ষমতা আছে। |
العليُّ الأَعْلَى
|
(আল আলিউল আ’লা) সুউচ্চ, মহান, মহত্তর,
সর্বোচ্চ, তিনি মর্যাদা, ক্ষমতা ও সত্বা তথা সকল দিক থেকে সর্বোচ্চ। সব
কিছুই তাঁর রাজত্ব ও ক্ষমতার অধিনে। তাঁর উপরে কখনোই কিছু নেই। |
المُتَعَالُ
|
(আল মু’তাল) চিরউন্নত, তাঁর উচ্চতা ও মহত্বের
সামনে সকল বস্তু অবনমিত। তাঁর উপরে কিছু নেই। সকল বস্তু তাঁর নীচে ও
অধীনে, তাঁর ক্ষমতা ও রাজত্বের বলয়ে। |
الْمُقَدِّمُ
|
(আল মুক্বাদ্দিম) অগ্রসরকারী, তিনি নিজের
ইচ্ছা ও প্রজ্ঞা অনুযায়ী সকল বস্তুকে বিন্যস্ত করেছেন ও স্বস্থানে রেখেছেন।
তাঁর জ্ঞান ও অনুগ্রহের ভিত্তিতে সৃষ্টির কাউকে কারো উপর প্রাধান্য
দিয়েছেন। |
الْمُؤَخِّرُ
|
(আল মুআখখির) পশ্চাতে প্রেরণকারী, তিনি
প্রতিটি বস্তুকে নিজের হিকমত অনুযায়ী যেভাবে ইচ্ছা স্থাপন করেন, যাকে ইচ্ছা
অগ্রসর করেন, যাকে ইচ্ছা পশ্চাতে রাখেন। পাপী বান্দাদেরকে শাস্তি দিতে
দেরী করেন, যাতে তারা তাওবা করতে পারে আল্লাহর কাছে ফিরে আসতে পারে। |
الْمُسَعِّرُ
|
(আল মুসায়্যি’র)[2]
মূল্য নির্ধারণকারী, তিনি নিজের প্রজ্ঞা ও জ্ঞানের দাবী অনুযায়ী বিভিন্ন
বস্তুর মূল্য, মর্যাদা, গুরুত্ব ও প্রভাবকে বৃদ্ধি করেন অথবা হ্রাস করেন।
ফলে উহা মূল্যবান (মহার্ঘ) হয় অথবা সস্তা হয়। |
الْقَابِضُ
|
(আল কাবিয) কবজকারী, সংকুচনকারী, তিনিই
প্রাণীকুলের জান কবজ করেন। তিনি নিজের হিকমত ও ক্ষমতা বলে সৃষ্টিকুলের
মধ্যে যার ইচ্ছা রিযিক সংকুচন ও হ্রাস করেন- তাদেরকে পরীক্ষা করার জন্যে। |
الْبَاسِطُ
|
(আল বাসিত্ব) সমপ্রসারণকারী, তিনি তাঁর
উদারতা ও করুণায় বান্দাদের রিযিক প্রশস্ত করেন। অতঃপর তাঁর হিকমত অনুযায়ী
তা দ্বারা তাদের পরীক্ষা করেন। তিনি গুনাহগারদের তাওবা কবূল করার জন্যে
দু’হস্ত প্রসারিত করেন। |
الأَوَّلُ
|
(আল আওয়াল) অনাদী, তিনি সেই সত্বা যাঁর
পূর্বে কিছুই ছিল না। তিনি সৃষ্টি করেছেন বলেই মাখলুক অস্তিত্ব লাভ করেছে।
কিন্তু তাঁর অস্তিত্বের কোন শুরু নেই। |
الآخِرُ
|
(আল আখির) অনন্ত, তাঁর পর কোন কিছু নেই।
তিনিই অনন্ত, চিরকালীন ও অবিশষ্ট। পৃথিবীর সব কিছু ধ্বংস হয়ে যাবে; অতঃপর
প্রত্যাবর্তন করবে তাঁর কাছেই। কিন্তু তাঁর অস্তিত্বের শেষ নেই। |
الظَّاهِرُ
|
(আয যাহির) প্রকাশ্য, তিনি সবকিছুর উপরে সুউচ্চ। তাঁর উচ্ছে কিছু নেই। তিনি সকল বস্তুকে করায়ত্বকারী ও বেষ্টনকারী। |
البَاطِنُ
|
(আল বাত্বিন) গোপন, তাঁর পরে কোন কিছু নেই।
তিনি দুনিয়াতে মাখলুকের দৃষ্টির আড়ালে থাকেন; তারপরও তিনি তাদের নিকটবর্তী ও
তাদেরকে বেষ্টনকারী। |
الوِتْرُ
|
(আল বিতর) বেজোড় বা একক, তিনি একক তাঁর কোন শরীক নেই। তিনি অদ্বিতীয় তাঁর কোন নযীর নেই। |
السَّيِّدُ
|
(আস সাইয়েদ) প্রভু, নেতা, মানুষের অভাব
পুরণকারী, সৃষ্টিকুলের একক নেতৃত্ব তাঁর হাতেই। তিনি তাদের মালিক ও
পালনকর্তা। সবকিছু তাঁর সৃষ্টি ও দাস। |
الصَّمَدُ
|
(আস সামাদ) অমুখাপেক্ষী, স্বয়ং সম্পূর্ণ,
তিনি নিজের নেতৃত্বে স্বয়ং সম্পূর্ণ, | মাখলুকাত যাবতীয় প্রয়োজনে তাঁরই
স্মরণাপন্ন হয়। কেননা তারা তাঁর কাছে বড়ই নি:স্ব তিনি সবার আহার যোগান;
তাকে কেউ আহার দেয় না, তাঁর আহারের কোন দরকার নেই। |
الوَاحِدُ الأَحَدُ
|
(আল ওয়াহিদুল আহাদ) একক, অদ্বীতিয়, সকল
ক্ষেত্রে পরিপূর্ণতায় তিনিই একক ও অদ্বিতীয়; তাঁর কোন অংশী নেই। তাঁর
অনুরূপ কোন কিছু নেই। এই গুণাবলী এককভাবে তাঁরই ইবাদতকে আবশ্যক করছে। তাঁর
কোন শরীক নেই। |
الإِلَهُ
|
(আল ইলাহ) মা’বূদ বা উপাস্য, তিনিই সত্য মাবূদ। এককভাবে তিনি যাবতীয় ইবাদত ও দাসত্ব পাওয়ার হকদার; অন্য কেউ নয়। |