"আমি তার কর্ণ হয়ে যাই" এই হাদিসটি বুঝার ক্ষেত্রে সলফে সালেহীনের অনুসৃত পদ্ধতি এবং এ বিষয়ে ইত্তিহাদিয়া সম্প্রদায়ের দৃষ্টিভঙ্গির অপনোদন।
প্রশ্ন:
আল্লাহ তাআলা হাদিসে কুদসিতে বলেছেন- "যখন আমি তাকে (বান্দাকে) ভালবাসি তখন
আমি তার কান হয়ে যাই, যে কান দিয়ে সে শুনে। আমি তার চোখ হয়ে যাই, যে চোখ
দিয়ে সে দেখে। আমি তার হাত হয়ে যাই, যে হাত দিয়ে সে ধরে। আমি তার পা হয়ে
যাই, যে পা দিয়ে সে হাঁটে।" এমতাবস্থায় আমরা স্রষ্টা ও সৃষ্টি একই সত্তা এই
মতাদর্শ এবং আল্লাহর গুণাবলী সম্বলিত আয়াতসমূহের ব্যাপারে আহলে সুন্নাহ
ওয়াল জামাআতের অনুসৃত পদ্ধতির মাঝে কিভাবে সমন্বয় করব? আশা করি আপনারা
বিষয়টি বিস্তারিতভাবে আলোচনা করবেন; আল্লাহ আপনাদের সম্মান বৃদ্ধি করুন।
কারণ আল্লাহর গুণাবলীকে অস্বীকারকারী সম্প্রদায় আল্লাহর নাম ও গুণাবলীর
ক্ষেত্রে সলফে সালেহীনদের অনুসৃত পদ্ধতিকে এই বলে প্রশ্নবিদ্ধ করেন যে,
আমরা যদি আল্লাহর গুণাবলী সম্বলিত আয়াত ও হাদিসকে মূল অর্থে গ্রহণ করি এতে
করে স্রষ্টা ও সৃষ্টি এক সত্তা- এ দৃষ্টিভঙ্গি অনিবার্য হয়ে যায়।
আল্লাহর গুণাবলীর ক্ষেত্রে আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের দৃষ্টিভঙ্গি
হলো- কুরআন ও হাদিসের দলীল ছাড়া আল্লাহর জন্য কোন গুণ বা বৈশিষ্ট্য
সাব্যস্ত করা যাবে না। কুরআন ও হাদিসে আল্লাহর যেসব গুণের উল্লেখ রয়েছে
তাঁর জন্য শুধু সে গুণগুলো সাব্যস্ত করতে হবে এবং কোন মাখলুকের সাথে
আল্লাহর গুণ বা বৈশিষ্ট্যের সাদৃশ্যতাকে দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করতে হবে।
যেহেতু আল্লাহ নিজেই বলেছেন- (لَيْسَ كَمِثْلِهِ
شَيْءٌ ) অর্থ- “তাঁর মত কিছুই নেই।” এটি মুমাচ্ছিলা (সাদৃশ্যবাদী) সম্প্রদায়ের মতাদর্শের বিপক্ষে দলীল। কোন কোন আলেম এদেরকে মুশাব্বিহা (উপমাবাদী) বলে আখ্যায়িত করে থাকেন। এ আয়াতের পরবর্তী অংশ হচ্ছে- (وَهُوَ السَّمِيعُ
البَصِيرُ) অর্থ- "তিনি হচ্ছে সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।"[সূরা শুরা, আয়াত: ১১] এ অংশে মুআত্তিলা
(নিরাকারবাদী) মতাদর্শের বিপক্ষে দলীল রয়েছে। যারা বিশ্বাস করেন যে, নামের
মধ্যে সাদৃশ্য থাকা অস্তিত্বের মধ্যেও সাদৃশ্য থাকাকে অনিবার্য করে।
আমরা
155206 নং প্রশ্নের
জবাবে আল্লাহর
নাম ও
গুণাবলী বিষয়ক
কিছু গুরুত্বপূর্ণ নীতিমালা
উল্লেখ করেছি। আপনি
সে নীতিগুলো
পড়ে নিতে
পারেন। 34630 নং
প্রশ্নের জবাবে
আল্লাহর নাম
ও গুণাবলীর
প্রতি ঈমান
সম্পর্কে বিস্তারিত
আলোচনা করা
হয়েছে। সেখানে
আল্লাহর নাম
ও গুণাবলীর
ক্ষেত্রে পরিহারযোগ্য তাহরিফ (গুণকে
বিকৃত করা),
তা'তিল (গুণকে
অস্বীকার করা),
তামছিল (মাখলুকের
গুণের সাথে
সাদৃশ্য দেয়া)
ও তাক্য়িফ (গুণ
বা বৈশিষ্ট্যের অবয়ব
নির্ধারণ করা)
এ চারটি
বিষয়ের বিস্তারিত
ব্যাখ্যা পেশ
করা হয়েছে। যে
বা যারা
এ চারটি
নিষিদ্ধ বিষয়ে
লিপ্ত হবেন
তিনি আল্লাহর
নাম ও
গুণাবলীর প্রতি
যেভাবে ঈমান
আনা ওয়াজিব
সেভাবে ঈমান
আনেননি। শাইখ
ইবনে উছাইমীন
(রহঃ) তাঁর
লিখিত আল-কাওয়ায়েদ আল-মুছলা ফি সিফাতিল্লাহি ওয়া আসমাইহিল হুসনা গ্রন্থে
এ সংক্রান্ত
বেশকিছু বিধি
উল্লেখ করেছেন। বইটি
নিম্নোক্ত লিঙ্কে
পাওয়া যাবে। http://www.ibnothaimeen.com/all/books/article_16822.shtml এছাড়া
শাইখ আলাবি
বিন আব্দুল
কাদের আল-সাক্কাফ (হাঃ)
তাঁর লিখিত
সিফাতুল্লাহি আয্যা ওয়া জাল্ল ফিল কিতাব ওয়াস সুন্নাহ নামক
কিতাবে আল্লাহর
গুণাবলী সম্পর্কিত
একুশটি নীতি উল্লেখ
করেছেন। নীচের
লিঙ্কে গিয়ে
বইটি পড়া
যাবে।
দুই:
প্রশ্নকারী যে হাদিসটি উল্লেখ করেছেন তা আবু হুরায়রা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদিস। তিনি বলেন: রাসূল (সাঃ) বলেছেন: "আল্লাহ তাআলা বলেন- যে ব্যক্তি আমার কোন ওলির সাথে শত্রুতা পোষণ করে আমি তার বিরুদ্ধে লড়াই ঘোষণা করি। আমার বান্দার প্রতি যা ফরয
করেছি তা দ্বারাই সে আমার
অধিক নৈকট্য লাভ করে। আমার বান্দা নফল
ইবাদতের মাধ্যমেও আমার নৈকট্য হাছিল করতে থাকে। অবশেষ আমি
তাকে ভালবেসে ফেলি। যখন আমি তাকে ভালবাসি তখন আমি তার কর্ণ হয়ে যাই, যা দিয়ে সে শুনে। আমি তার চক্ষু হয়ে যাই, যা দিয়ে সে দেখে। আমি তার হাত হয়ে যাই, যা দিয়ে সে ধরে। আমি তার পা হয়ে যাই, যে পা দিয়ে সে চলাফেরা করে। সে আমার কাছে কিছু প্রার্থনা করে, আমি তাকে তা দেই। সে যদি আমার নিকট আশ্রয় চায়, তাহলে আমি তাকে আশ্রয় দেই। [সহীহ
বুখারী, হাদিস নং- ৬১৩৭] এখানে আমরা একটা বিষয়ে প্রশ্নকারীর দৃষ্টি আকর্ষণ
করতে চাই। সেটা হলো এই হাদিস দিয়ে হুলুলিয়া সম্প্রদায় তাদের ভ্রান্ত
বিশ্বাসের পক্ষে দলীল দিয়ে থাকে; ইত্তিহাদিয়া সম্প্রদায় নয়। ইত্তিহাদ ও
হুলুল এর মধ্যে পার্থক্য জানার জন্য 147639
নং প্রশ্নের জবাব দেখুন। হুলুলিয়াগণ বলেন যে, এই হাদিসটি প্রমাণ করে যে -
স্রষ্টা ও সৃষ্টি একই সত্তা। যখন বান্দা ফরয ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর
নৈকট্য হাছিল করে নেয় তখন আব্দ নিজেই মাবুদ হয়ে যায় (আল্লাহ ক্ষমা করুন)।
আব্দ নিজেই আল্লাহর কর্ণ দিয়ে শুনে, আল্লাহর চক্ষু দিয়ে দেখে। অর্থাৎ
খালেক ও মাখলুক একীভূত হয়ে এক জিনিসে পরিণত হয়ে যায়। এ ধরনের বিশ্বাস
নিঃসন্দেহে ইসলাম বিনষ্টকারী কুফরি বিশ্বাস। যে হাদিসটি দিয়ে তারা দলীল
দিচ্ছেন খোদ সে হাদিসই তাদের বিপক্ষে দলীল। যেহেতু সে হাদিসে খালেক ও
মাখলুক এর দুইটি সত্তা সাব্যস্ত করা হয়েছে এবং উভয় সত্তার মধ্যে পার্থক্য
করা হয়েছে। আবেদ ও মাবুদের দুইটি সত্তা সাব্যস্ত করা হয়েছে এবং উভয় সত্তার
মধ্যে পার্থক্য নিরুপণ করা হয়েছে। মুহিব্ব ও মাহবুবের দুইটি সত্তা সাব্যস্ত
করা হয়েছে। প্রার্থনাকারী ও সাড়াদানকারীর দুইটি সত্তা সাব্যস্ত করা হয়েছে।
হাদিসের মধ্যে এমন দলীল পাওয়া যায় না- যা প্রমাণ করে যে, তারা উভয়ে একই
সত্তার অধিকারী।
ইবনে তাইমিয়া (রহঃ) বলেন: ইত্তিহাদপন্থী নাস্তিকগণ তাদের মতাদর্শের
পক্ষে এই দলীল উল্লেখ করেন যে, আমি তার কর্ণ, আমি তার চক্ষু, আমি তার হাত,
আমি তার পা।" প্রকৃতপক্ষে কয়েকটি দিক হতে হাদিসটি তাদের বিপক্ষে দলীল:
হাদিসে বলা হয়েছে- "যে ব্যক্তি আমার কোন ওলির সাথে শত্রুতা পোষণ করে আমি তার বিরুদ্ধে যুদ্ধের ঘোষণা দিই।"
অর্থাৎ আল্লাহ তাআলা শত্রুও সাব্যস্ত করেছেন, ওলি (বন্ধু)ও সাব্যস্ত
করেছেন। তিনি নিজের জন্য এটাও সাব্যস্ত করেছেন, ওটাও সাব্যস্ত করেছেন।
অনুরূপভাবে হাদিসে এসেছে- "আমি যা ফরয করেছি সেটার মত অন্যকিছু দিয়ে
বান্দা আমার নৈকট্য হাছিল করতে না।" অর্থাৎ আল্লাহর নৈকট্য প্রাপ্ত বান্দা ও
বিভিন্ন ইবাদত ফরযকারী প্রতিপালক সাব্যস্ত করা হয়েছে। হাদিসে আরো এসেছে- "আমার বান্দা উপর্যুপরি নফল ইবাদত করতে থাকে। এক পর্যায়ে আমি তাকে ভালবাসি।" অর্থাৎ 'নৈকট্য লাভকারী ও যার নৈকট্য লাভ করা হয়' সাব্যস্ত করা হয়েছে। মুহিব্ব ও মাহবুব সাব্যস্ত করা হয়েছে। এ দলীলগুলো তাদের একক
অস্তিত্বের মতাদর্শকে অপনোদন করে দেয়। হাদিসে আরো এসেছে- "আমি তাকে ভালবাসতে থাকি। একপর্যায়ে আমি তার কর্ণ হয়ে যায়, যে কান দিয়ে সে শুনে। আমি তার চক্ষু হয়ে যায়, যে চক্ষু দিয়ে সে দেখে।"
অর্থাৎ আল্লাহর ভালবাসা প্রাপ্তির পর বান্দার জন্য এ বিষয়গুলো সাব্যস্ত
করা হয়েছে। কিন্তু ইত্তিহাদিয়াদের মতে আল্লাহর ভালবাসা পাওয়ার পরের অবস্থা ও
আগের অবস্থা অভিন্ন।[মাজমু' ফাওয়া (২/৩৭১, ৩৭২)
ইবনে তাইমিয়া আরো বলেন: হাদিসের পরের অংশে আল্লাহ তাআলা বলেন- ( وَلَئِنْ سَأَلَنِي
لَأُعْطِيَنَّهُ وَلَئِنْ اسْتَعَاذَنِي لَأُعِيذَنَّهُ ) অর্থ- "যদি সে আমার নিকট কোন কিছু প্রার্থনা করে আমি তাকে সেটা দান করি। যদি সে আমার কাছে আশ্রয় চায় আমি তাকে আশ্রয় দান করি।"
এখানে প্রার্থনাকারী ও প্রার্থনাগ্রহণকারীর আলাদা সত্তা সাব্যস্ত করা
হয়েছে। আশ্রয়প্রার্থী ও আশ্রয়প্রদানকারীর আলাদা সত্তা সাব্যস্ত করা হয়েছে।
বান্দাকে আশ্রয়প্রার্থী সাব্যস্ত করা হয়েছে। আর প্রতিপালককে
আশ্রয়প্রদানকারী সাব্যস্ত করা হয়েছে। এই হাদিসে মহান কিছু উদ্দেশ্যের
সন্নিবেশ ঘটেছে।[মাজমু'ল ফাতাওয়া ১৭/১৩৪]
ইবনে হাজার (রহঃ) এই হাদিসের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন: এই হাদিসটির অর্থ
বুঝার ক্ষেত্রে কয়েকটি দৃষ্টিভঙ্গি থাকতে পারে। তবে যে দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই
দেখা হোক না কেন এই হাদিসে ইত্তেহাদিয়া বা ওয়াহদাতুল ওজুদ (একক
অস্তিত্ববাদ) মতাদর্শীদের পক্ষে কোন দলীল নেই। যেহেতু হাদিসের পরের অংশে
এসেছে- "যদি বান্দা আমার কাছে প্রার্থনা করে, যদি বান্দা আমার কাছে আশ্রয় চায়।" অর্থাৎ হাদিসের এ অংশটি ইত্তিহাদিয়া ও ওয়াহদাতুল ওজুদ মতাদর্শীদের বিপক্ষে সুস্পষ্ট দলীল।[ফাতহুল বারী ১১/৩৪৫]
ইমাম শাওকানী (রহঃ) ইবনে হাজার (রহঃ) এর এ উক্তিটি উদ্ধৃত করার পর বলেন:
তিনি বাতিলপন্থীদের দলীল খণ্ডন করতে গিয়ে হাদিসের যে অংশটি উদ্ধৃত করেছেন
(যদি আমার কাছে প্রার্থনা করে, যদি আমার কাছে আশ্রয়প্রার্থী হয়) এর
ব্যাখ্যা হলো এই যে, হাদিসের এ অংশটি প্রার্থনাকারী ও প্রার্থনাগ্রহণকারীর
আলাদা অস্তিত্ব সাব্যস্ত করে এবং আশ্রয়প্রার্থী ও আশ্রয়দাতার আলাদা
অস্তিত্ব সাব্যস্ত করে। সম্ভবতঃ তিনি হাদিসটি নিয়ে যথোপযুক্ত চিন্তাভাবনা
করেননি। যদি করতেন তাহলে তিনি শুধু প্রার্থনা ও আশ্রয়প্রার্থনার কথা উল্লেখ
করতেন না। কারণ গোটা হাদিসটি তাদের বিরুদ্ধে দলীল। হাদিসের বাণী: "যে ব্যক্তি আমার কোন ওলির সাথে শত্রুতা পোষণ করে।"
এ অংশটি শত্রু, বিপক্ষ শত্রু ও শত্রুতার কারণের অস্তিত্ব সাব্যস্ত করে।
অনুরূপভাবে বন্ধুত্বপোষণকারী ও বন্ধুত্বগ্রহণকারীর অস্তিত্ব সাব্যস্ত করে।
অনুরূপভাবে যুদ্ধঘোষণাকারী ও যার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা হয় উভয়ের
অস্তিত্ব সাব্যস্ত করে। যুদ্ধকারী ও যার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা হয় উভয়ের
অস্তিত্ব সাব্যস্ত করে। নৈকট্যলাভকারী ও নৈকট্যপ্রদানকারীর অস্তিত্ব
সাব্যস্ত করে। বান্দা ও মাবুদের অস্তিত্ব সাব্যস্ত করে। মুহিব্ব ও মাহবুবের
অস্তিত্ব সাব্যস্ত করে। এভাবে হাদিসের শেষ পর্যন্ত। গোটা হাদিসটি
ইত্তেহাদিয়া সম্প্রদায়ের মতাদর্শের বিপক্ষে দলীল। কিন্তু তারা তা অনুধাবন
করতে চায় না। বরঞ্চ আরো পরিস্কারভাবে হাদিসে এসেছে- "মুমিনের আত্মা কবজের ক্ষেত্রে আমি যতবেশী দ্বিধাগ্রস্ত হই অন্য কোন বিষয়ে আমি সে রকম দ্বিধাগ্রস্ত হই না।"
এই হাদিসে- দ্বিধাগ্রস্ত ও যার ক্ষেত্রে দ্বিধাগ্রস্ত দুইটি সত্তার
অস্তিত্ব সাব্যস্ত করা হয়েছে। কর্তা ও কৃত দুইটি সত্তার অস্তিত্ব সাব্যস্ত
করা হয়েছে। যে আত্মার ক্ষেত্রে দ্বিধাগ্রস্ত অর্থাৎ মুমিন বান্দা ও যিনি
দ্বিধাগ্রস্ত অর্থাৎ কবজকারী দুইটি সত্তা সাব্যস্ত করা হয়েছে। মৃত্যুকে
অপছন্দকারী তথা মুমিন বান্দা এবং ও মৃত্যুদান করাকে অপছন্দকারী তথা আল্লাহ
তাআলার অস্তিত্ব সাব্যস্ত করা হয়েছে।
সারকথা হচ্ছে- ইত্তেহাদিয়াদের এই মতাদর্শ সকল বিবেকবানের বিবেককে বিকল
করে দেয়। সুতরাং তাদের বিপক্ষে আর কি প্রমাণ পেশ করার প্রয়োজন আছে। তারা যে
শুবা-সন্দেহ দ্বারা বিপথগামী হয়েছে, সেটি দ্বৈতবাদে বিশ্বাসীদের কাছ থেকে
ধারকৃত। যারা মনে করেন ঈশ্বর দুইজন- কল্যাণের ঈশ্বর ও অনিষ্টের ঈশ্বর।
কল্যাণের ঈশ্বর হচ্ছে- আলো। আর অনিষ্টের ঈশ্বর হচ্ছে- অন্ধকার। তাদের মতে
সকল অস্তিত্বশীলের মূলে রয়েছে এই দুই সত্তা। যখন মানুষের ওপর আলো প্রভাব
বিস্তার করে তখন মানুষ আলোকিত হয়। আর যখন অন্ধকার প্রভাব বিস্তার করে তখন
মানুষ অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়। কিন্তু ইত্তেহাদিয়াগণ এ ব্যাপারে উদাসীন ছিলেন
যে, এই মতাদর্শের মূল বিশ্বাসই তাদের বিপক্ষে। কারণ অন্ধকার আর আলো তো এক
জিনিস নয়। অনুরূপভাবে অন্ধকার বা আলো যে সত্তার ওপর প্রভাব বিস্তার করে
সেটাও তো আলাদা একটি সত্তা।[ইমাম শাওকানী এর কাতরুল ওলি আলা হাদিসিল ওলি গ্রন্থ হতে গৃহীত, পৃষ্ঠা ৪১৯-৪২১] আলোচিত হাদিসটির মূল পাঠ এবং আরো কিছু বিশ্লেষণ
21371 ও
14397 নং প্রশ্নের জবাবে দেখা যেতে পারে। আল্লাহই ভাল জানেন।
ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব
No comments:
Post a Comment